সর্ব শ্রেষ্ঠ ঈদ

0 663

গাদীরে খুম

gallery_12760_9_38693

যে সকল পথিক মদীনা হতে মক্কার দিকে যাত্রা করে, তাদের পথটির দূরত্ব হল পাঁচশ’ কিলোমিটারের চেয়ে একটু বেশী এই পথিকগণ ২৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রান্ত করার পর যে স্থানে উপস্থিত হয়, সে স্থানটির নাম হচ্ছে“রাবেগ” “রাবেগ”[1] জোহফার নিকটবর্তী একটি ছোট শহর আর জোহফা হচ্ছে- হজ্জের পাঁচটি মিকাত বা ইহরাম বাঁধার স্থানসমূহের মধ্যে একটি; যেখানে শামের (সিরিয়ার) হাজীগণ যারা জেদ্দা থেকে মক্কায় যায়, তারা উক্ত স্থানে মোহরিম হয় বা ইহরাম বাঁধে জোহফা হতে মক্কার দূরত্ব হচ্ছে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার রাবেগ পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার[i] সেখানে একটি জলাশয় ছিল যার পানি দুর্গন্ধ, বিষাক্ত পথিকদের জন্য ব্যবহার অনোপযোগী এবং কাফেলা বা পথিকরা সেখানে দাঁড়াতো না[ii] বলা হয়ে থাকে সে কারণেই “খুম” নামকরণ করা হয়েছে কারণ, “খুম” সমস্ত নষ্ট জিনিসকে বলা হয়ে থাকে যা দুর্গন্ধযুক্ত তাই পাখির খাঁচাকেও কারণেই খুম বলা হয়ে থাকে

বিদায় হজ্জের একটি বিবরণ

হিজরী দশম বছর সমস্ত আরব উপদ্বীপে ইসলাম বিস্তার লাভ করেছে আরবের সকল গোত্রই মুসলিম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, রাসূল (সা.)-এর রেসালাতকে স্বীকার করে নিয়েছেন মূর্তি মূর্তিপূজার কোন চিহ্নই তাদের কোন গোত্রের মাঝে দেখতে পাওয়া যায় না রেসালাতের কর্ণধারের পরিশ্রম আজ ফলদায়ক হয়েছে এবং তার সুস্বাদু ফলকে পাদনশীল করেছে উপাস্যের সিংহাসন থেকে মূর্তিগুলোর পতন ঘটেছে পবিত্র বাণী “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বিস্তৃত আরব উপদ্বীপে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে

মানুষের মধ্যে এখন পার্থক্য শুধুমাত্র তাদের আন্তরিক ঈমানের পর্যায় ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রবর্তিতার ভিত্তিতে মহান রাসূল (সা.) -যিনি প্রায় ২৩টি (তেইশটি) বছর ধরে প্রচণ্ড জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন এই দীর্ঘ সময়ে তিনি এক মূহুর্তের জন্যেও তাঁর কর্তব্য রেসালাতের প্রচার কার্যে অবহেলা করেন নি- তিনি কখনোই দুর্বলতা অনূভব করেন নি, এখন তিনি বুঝতে পেরেছেন যে, অতিশীঘ্রই এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে এবং মহান প্রভূর সাথে সাক্ষাত করতে হবে তাই পূর্বের মতই নিরলশ চেষ্টা করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না উম্মত দীপ্তিমান হয় ইসলামী আইন-কানুন শিক্ষা লাভ করে অতিসামান্যই ইসলামী বিধি-বিধান অবশিষ্ট আছে যা এখনও প্রচারের শিক্ষাদানের উপযুক্ত সময় আসেনি ফরজ হজ্জ হচ্ছে তার একটি তিনি তখনও সুযোগ পান নি যে, মুসলমানদেরকে নামাজের ন্যায় হজ্জের শিক্ষা দিবেন তাই এখনই একমাত্র শেষ সময়

সাধারণ ঘোষণা করা হল যে, রাসূল (সা.) হজ্জ করতে যাবেন বিভিন্ন গোত্রের মানুষেরা মদীনার অভিমুখে যাত্রা করলেন এবং তিনি (সা.) জিলক্বদ মাসের দিন (ছয় দিন) অবশিষ্ট থাকতে বৃহস্পতিবারে[iii] অথবা চার দিন অবশিষ্ট থাকতে শনিবারে, আবু দুজানাকে মদীনায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে[iv] তাঁর সমস্ত স্ত্রীগণ পরিবারবর্গসহ সঙ্গীদের নিয়ে যাত্রা করলেন[v] তিনি একশ’টি উট[vi] কোরবানীর জন্য সাথে নিয়ে মদীনা হতে যাত্রা করেছিলেন

সময় মদীনায় রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল যারফলে মুসলমানদের মধ্যে অনেকেই এই বরকতময় সফর থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন[vii] তারপরেও হাজার হাজার লোক রাসূল (সা.)-এর সহযাত্রী হয়েছিলেন ঐতিহাসিকগণ তাঁর সহযাত্রীর সংখ্যা চল্লিশ হাজার, সত্তর হাজার, নব্বই হাজার, একলক্ষ চৌদ্দ হাজার, একলক্ষ বিশ হাজার, একলক্ষ চব্বিশ হাজার পর্যন্ত উল্লেখ করেছেন[viii] কিন্তু এগুলোর পাশাপাশি আরো বলা যেতে পারে যে, আসলে এত পরিমাণ জনগণ তাঁর সহযাত্রী হয়েছিলেন যে, তার সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কারো সাধ্য ছিল না[ix] তাও আবার তাঁরা শুধু সকল ব্যক্তিই ছিলেন যারা মদীনা হতে এসেছিলেন তবে হাজীদের সংখ্যা এর মধ্যেই সীমিত ছিল না কেননা, মক্কার তার আশেপাশের অধিবাসীগণ এবং যারা ইয়েমেন থেকে আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.)-এর সাথে এসেছেন তারাও উক্ত হজ্জে অংশগ্রহণ করেছিলেন

রাসূল (সা.) গোসল করলেন পবিত্র দেহ মোবারকে তেল মালিশ করলেন, সুগন্ধি লাগালেন এবং চুলগুলোকে চিরুণী দিয়ে আঁচড়ে পরিপাটি করলেন[x] অতঃপর মদীনা হতে বের হলেন মদীনা হতে বের হওয়ার সময় তাঁর শরীরে মাত্র দু’টি কাপড় ছিল যার একটি ছিল কাঁধের উপর রাখা আর অপরটি ছিল কোমরে বাঁধা একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, যখন “জিল হুলাইফা”তে পৌঁছলেন তখন ইহরাম বাঁধলেন[xi] অতঃপর আবারও পূর্বের ন্যায় পথ চলতে শুরু করলেন এবং জিল হিজ্জ মাসের চার তারিখ মঙ্গলবারে মক্কায় প্রবেশ করলেন বনী শাইবার ফটক দিয়ে মসজিদুল হারামে প্রবেশ করলেন,[xii] তাওয়াফ করলেন, তাওয়াফের নামাজ পড়লেন, সাফা মারওয়ার মাঝে সাঈ করলেন এবং নিয়মানুযায়ী ওমরার কর্মাদি সম্পাদন করলেন[xiii] যারা নিজেদের সাথে কোরবানীর পশু নিয়ে আসেন নি তাদের উদ্দেশ্যে বললেন- তারা যেন চুল কেটে ইহরাম খুলে ফেলে[xiv] তিনি (সা.) যেহেতু কোরবানীর পশু নিয়ে এসেছিলেন তাই ইহরাম অবস্থায় রয়ে গেলেন যতক্ষন পর্যন্ত না মীনাতে কোরবানী করেন[xv] আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) যেহেতু রাসূল (সা.)-এর হজ্জে যাওয়ার কথা ইতিপূর্বেই অবগত হয়েছিলেন তাই তিনিও ইয়েমেন থেকে ৩৭টি (সাইত্রিশটি) কোরবানীর পশু সাথে নিয়ে এসেছিলেন ইয়েমেনের অধিবাসীদের মিকাতে একই নিয়্যতেই, যে নিয়্যতে রাসূল (সা.) ইহরাম বেঁধেছিলেন, ইহরাম বাঁধলেন এবং রাসূল (সা.)-এর ন্যায় সাফা মারওয়া সাঈ করার পর ইহরাম অবস্থায় রয়ে গেলেন[xvi]

রাসূল (সা.) জিল হিজ্জ মাসের ৮ম (অষ্টম) দিনে মীনা হয়ে আরাফার ময়দানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন যাতে হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শুরু করতে পারেন ৯ম (নবম) দিনের সূর্যোদয় পর্যন্ত মীনাতেই ছিলেন অতঃপর আরাফায় পৌঁছে স্বীয় তাঁবুতে অবস্থান নিলেন

আরাফায় মুসলমানদের আড়ম্বরপূর্ণ জন সমাবেশে প্রাঞ্জল ভাষায় খুতবা পাঠ করলেন তাঁর এই খুতবাতে মুসলমানদেরকে ভ্রাতৃত্বের প্রতি পরস্পরের প্রতি সম্মানের কথা তুলে ধরলেন; ইসলাম পূর্ব অন্ধকার যুগের সমস্ত আইন-কানুনকে বাতিল ঘোষণা করলেন এবং স্বীয় রেসালাতের সমাপ্তির কথাও ব্যক্ত করলেন[xvii] ৯ম (নবম) দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করলেন যখন সূর্য অস্তমিত হল অন্ধকার নেমে আসল তখন “মুজদালাফা”র উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন[xviii] তিনি সেখানেই রাত্রি যাপন করার পর দশম দিনের প্রত্যূশে মীনার দিকে যাত্রা শুরু করলেন মীনার নিয়ম কানুন পালনের মাধ্যমে হজ্জ শেষ করলেন এবং এভাবেই হজ্জের বিধি-নিষেধগুলি মুসলমানদেরকে শিক্ষা দিলেন

এই হজ্জকে হাজ্জাতুল বিদা, হাজ্জাতুল ইসলাম, হাজ্জাতুল বালাগ, হাজ্জাতুল কামাল হাজ্জাতুত্‌ তামাম বলা হয়ে থাকে[xix] হজ্জের অনুষ্ঠান সমাপনীর পর তিনি মদীনার অভিমুখে যাত্রা করলেন যখন “রাবেগ” নামক স্থানে পৌঁছলেন, যে স্থানটিকে গাদীরে খুম বলা হত, হযরত জিব্রাঈল (আ.) অবতীর্ণ হলেন এবং তাঁর নিকট ঐশীবাণী এভাবে পাঠ করলেন-

Gيَأَيهَُّا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ  وَ إِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ  وَ اللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ  إِنَّ اللَّهَ لَا يهَْدِى الْقَوْمَ الْكَافِرِينَF  [xx]

“হে রাসূল! প্রচার করুন আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তাহলে আপনি তাঁর রেসালাতের কিছুই পৌঁছালেন না আল্লাহ আপনাকে (একদল) মানুষের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না[xxi]

আল্লাহর এই বাণী এমন এক নির্দেশ যা রাসূল (সা.)-এর উপর গুরুদায়িত্ব হিসেবে অর্পণ করা হয়েছে; এমনই এক ঘোষণা যে, কেউ যেন সম্পর্কে অনবগত না থাকে, আর যদি তিনি এমনটা না করেন তাহলে যেন তিনি দ্বীনের কোন কাজই সম্পাদন করেননি সুতরাং এই বাণী প্রচারের জন্য উক্ত স্থানই উক্ত সময়ই সর্বোত্তম; যেখানে মিশর, ইরাক, মদীনা অন্যান্য সকল স্থানের অধিবাসীদের পরস্পরের পথ আলাদা হওয়ার স্থান আর সকল হাজীগণ অনন্যোপায় হয়ে এই পথই পাড়ি দিয়ে থাকেন গাদীরের খুম নামক স্থানটিই একমাত্র স্থান ছিল যেখানে এই গুরুত্বপূর্ণ বাণীটি সমস্ত হাজীদের কর্ণকুহরে পৌঁছানো সম্ভবপর

তাই সকলকে সেখানে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হল তিনি বললেন অগ্রগামীদের ফিরে আসতে বল আর পশ্চাপদদের জন্য প্রতীক্ষা কর[xxii] হেজাজের উত্তপ্ত মরুতে জনগণের ঘটেছিল এক মহা সমাবেশ দিনটিতে ছিল প্রচণ্ড গরম এলাকাটির তাপমাত্রাও ছিল অত্যন্ত বেশী; এত গরম ছিল যে, সেখানকার পুরুষরা তাদের স্বীয় বস্ত্রের অর্ধাংশ দিয়েছিলেন মাথায় আর অর্ধাংশ দিয়েছিলেন পায়ের নীচে[xxiii] সকলের মনে একই প্রশ্ন যে, কি এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, এরকম প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বা বাহ্যিক দিক থেকে অনুপোযুক্ত জায়গায় রাসূল (সা.) আমাদেরকে স্বস্থানে অবস্থানের নির্দেশ দিলেন? তাপামাত্রা এত উচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল যে, হাজীদেরকে অস্থির করে ফেলছিল

তিনি নির্দেশ দিলেন- যেন বয়োবৃদ্ধদেরকে বৃক্ষতলে নিয়ে যাওয়া হয় আর উটের জিন গুলোকে যেন একটার উপর অপরটা রেখে মঞ্চ বানানো হয় সুউচ্চ মঞ্চ তৈরী করা হল প্রায় দুপুরের সময়, যখন সকল হাজীগণ মরুভূমিতে একত্রিত হয়েছিল, তিনি মঞ্চে আরোহন করলেন এবং এভাবে একটি বক্তব্য প্রদান করলেনঃ-

“সকল প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্যআমরা তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, তাঁর প্রতি ঈমান আনয়ন করি, তাঁর প্রতিই ভরসা করি এবং নাফ্‌সের তাড়না ও অস আচরণের জন্য চাই তাঁর নিকট আশ্রয়; তিনি এমনই প্রভূ যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন তার কোন পথপ্রদর্শক নেই আর যাকে তিনি পথ প্রদর্শন করেন তার কোন পথভ্রষ্টকারী নেই আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রভূ নেই ও মুহাম্মদ তাঁরই প্রেরিত বান্দা” অতঃপরঃ

“হে উপস্থিত জনতা; সর্বজ্ঞানী আল্লাহ তায়ালা আমাকে অবগত করেছেন যে, কোন নবীই তার পূর্ববর্তী নবীর বয়সের অর্ধেকের বেশী বয়স ধরে জীবন যাপন করে নি এবং অচিরেই আমাকেও চিরস্থায়ী আবাসের দিকে আহ্বান করা হবে, আর আমিও তার আহ্বানে সাড়া দিবএটা বাস্তব যে, আমাকে ও তোমাদের সবাইকে জিজ্ঞাসিত হতে হবেতখন তোমরা কি জবাব দিবে?”

সকলেই বললেনঃ- আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর বাণী আমাদের নিকট পৌঁছিয়েছেন ও উপদেশ দান করেছেন এবং চেষ্টা-প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে কোন ত্রুটি করেননিআল্লাহ আপনাকে উত্তম পুরস্কার দান করবেন

তিনি বললেনঃ- “তোমরা কি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ বা উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর প্রেরিত বান্দা, তাঁর প্রতিশ্রুত বেহেশ্‌ত, দোযখ ও মৃত্যু সত্য এবং নিঃসন্দেহে পুনরুত্থান সংঘটিত হবে ও আল্লাহ তায়ালা সকল মৃত ব্যক্তিদেরকে জীবিত করবেন?”

সকলেই বললেনঃ হ্যাঁ, আমরা এ সকল বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাক”[xxiv]

অতঃপর বললেনঃ “হে লোক সকল! তোমরা আমার কথা শুনতে পাচ্ছ?” তারা বললেনঃ- হ্যাঁ

তিনি বললেনঃ- “আমি তোমাদের পূর্বেই হাউজে কাউসারে উপস্থিত হব আর তোমরা হাউজের পার্শ্বে আমার নিকট উপস্থিত হবে; ঐ হাউজটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে সানআ’ হতে বুসরা’র দৈর্ঘ্যের সমান এবং সেখানে রয়েছে রৌপ্য পানপাত্র ও এর সংখ্যা নক্ষত্রের সমানএখন দেখতে চাই যে, আমার পরে তোমরা আমার এই দু’টি মহামূল্যবান বস্তুর সাথে কেমন আচরণ কর

উপস্থিত জনগণের মধ্য হতে একজন বলে উঠলেন- হে আল্লাহর রাসূল! ঐ দু’টি মহামূল্যবান বস্তু কি?

তিনি বললেনঃ “ঐ দু’টি বস্তু হচ্ছে- একটি সবচেয়ে বড় যা আল্লাহর কিতাব (কোরআন)যার এক প্রান্ত আল্লাহর হাতে এবং অপর প্রান্তটি তোমাদের হাতে; তাই এটাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে যাতে পথভ্রষ্ট না হওআর অপরটি হচ্ছে- ইত্‌রাত বা আমার নিকটাত্মীয়মহান প্রজ্ঞাবান আল্লাহ তায়ালা আমাকে জানিয়েছেন যে, এ দু’টি বস্তু কিয়ামতের দিনে হাউজে কাউসারে আমার নিকট না পৌঁছা পর্যন্ত একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে নাআর আমিও আল্লাহর নিকট এটাই কামনা করেছিলামসুতরাং তোমরা তাদের অগ্রবর্তী হবে না, হলে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পশ্চাতে পড়ে থাকবে না, তাহলেও ধ্বংস হয়ে যাবে অতঃপর আলীর হাত ধরে উঁচু করলেনআর এমনভাবে উঁচু করলেন যে, তাঁদের দু’জনেরই শুভ্র বগল দেখা যাচ্ছিলো এবং সেখানকার সকলেই আলীকে চিনতে পারলেন

তখন তিনি বললেনঃ “হে লোক সকল! মু’মিনদের মধ্যে কোন্‌ ব্যক্তি সর্বোত্তম এবং তাদের উপর প্রাধান্য রাখে?”

সকলেই বললোঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন

তিনি বললেনঃ “আল্লাহ আমার মাওলা* I অভিভাবক, আমি মু’মিনদের মাওলা ও অভিভাবকআর আমি মু’মিনদের উপর তাদের চেয়ে প্রাধান্য রাখিসুতরাং আমি যাদের মাওলা ও অভিভাবক এই আলীও তাদের মাওলা ও অভিভাবক[xxv]

এই বাক্যটি তিনি তিনবার পুনরাবৃত্তি করলেন

অতঃপর বললেনঃ “হে আল্লাহ! তাকে তুমি ভালবাস যে আলীকে ভালবাসে ও তুমি তার প্রতি শত্রুতা পোষণ কর যে আলীর প্রতি শত্রুতা পোষণ করে;[xxvi] তুমি সহযোগিতা কর তাকে যে আলীকে সহযোগিতা করে, তুমি তাকে নিঃসঙ্গ কর যে আলীকে নিঃসঙ্গ করে[xxvii] এবং সত্যকে সর্বদা আলীর সাথে রাখ সে যে দিকেই থাক না কেন[xxviii]

হে লোকসকল! তোমরা যারা উপস্থিত আছ তারা এই বাণীটি অবশ্যই অনুপস্থিতদের নিকট পৌঁছিয়ে দিবে[xxix]

রাসূল (সা.)-এর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর জিব্রাঈল (আ.) দ্বিতীয়বারের মত অবতীর্ণ হলেন এবং তাঁকে এই বাণীটি পৌঁছেদিলেন:

G الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَ أَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَ رَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلامَ دِيناF [xxx]

অর্থা আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম নেয়ামত বা অনুগ্রহকে তোমাদের উপর সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম (সূরা মায়িদা-৩)

রাসূল (সা.) এই আনন্দদায়ক বাণী প্রাপ্ত হওয়ার পর আনন্দিত হলেন এবং বললেন- আল্লাহ মহান! কেননা দ্বীন পরিপূর্ণ নেয়ামত বা অনুগ্রহ সম্পূর্ণ এবং মহান প্রভূ আমার রেসালাতের বা নবুয়্যতি দায়িত্বের আলীর বেলায়াতের বা অভিভাবকত্বের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন[xxxi]

অভিনন্দন অনুষ্ঠান

রাসূল (সা.) তাঁর বক্তব্য শেষ করার পর মঞ্চ থেকে নেমে আসলেন একটি তাঁবুতে বসলেন এবং বললেন: আলীও যেন অপর এক তাঁবুতে বসে অতঃপর নির্দেশ দিলেন, সকল সাহাবীগণ যেন আমিরুল মু’মিনীনের সাক্ষাতে যায় এবং বেলায়াতের মর্যাদার জন্য তাকে অভিনন্দন জানায়

ইতিহাস গ্রন্থ “রওজাতুস সাফা” এর লেখক গাদীরের ঘটনা উল্লেখ করার পর লিখেছেনঃ- রাসূল (সা.) এর নির্দেশ অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট তাঁবুতে বসলেন তারপর নির্দেশ দিলেন যেন পর্যায়ক্রমে সকলেই আলীর তাঁবুতে যায় তাঁকে অভিনন্দন জানায় যখন সবাই এই কাজটি সম্পন্ন করলেন, পর্যাক্রমে আলীর নিকট গেলেন এবং তাকে অভিনন্দন জানালেন[xxxii]

‘হাবিবুস সীয়ার’ নামক ইতিহাস গ্রন্থে গাদীরের হাদীস বর্ণনার পর এরূপে এসেছে যে, অতঃপর আমিরুল মু’মিনীন আলী (কাররামাল্লাহু ওয়াজহু অর্থা মূর্তির সমীপে তার শির কখনো নত হয়নি) রাসূল (সা.)-এর নির্দেশের ভিত্তিতে এক তাঁবুতে বসলেন যাতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাঁকে অভিবাদন জানাতে পারেন, বিশেষ করে উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বেলায়াতের বা অভিভাবকত্বের কর্ণধারকে বললেন-

<بخّ بخّ يابن ابي طالب أصْبَحْتَ مولاي و مولي كل مؤمن و مؤمنة>

অর্থা অভিনন্দন, অভিনন্দন হে আবু তালিব নন্দন! আজ হতে আপনি আমার এবং সকল মু’মিন পুরুষ নারীর মাওলা হলেন[xxxiii]

তারপর উম্মাহাতুল মু’মিনীন রাসূল (সা.)-এর ইঙ্গিতে আমিরুল মু’মিনীনের তাঁবুতে গেলেন এবং তাকে অভিবাদন জানালেন

বিশিষ্ট শিয়া মুফাস্‌সীর মুহাদ্দিস মরহুম তাবার্‌সী তাঁর “ইলামুল ওয়ারা” নামক গ্রন্থে ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন[xxxiv]

সকল সাহাবীগণ আবার রাসূল (সা.)-এর হাতে বাইয়াত বা শপথ গ্রহণ করলেন এবং সেই সাথে আলী (আ.)-এর সাথেও বাইয়াত বা অঙ্গীকারাবদ্ধ হলেন সর্ব প্রথম যে ব্যক্তিবর্গ রাসূল (সা.)-এর আলী (আ.)-এর হাতে হাত রেখেছিলেন তারা ছিলেন আবু বকর, উমর, উসমান, তালহা জোবায়ের[xxxv] ইতিপূর্বেও তুলে ধরেছি যে, অভিনন্দনের জন্য উমর যে বাক্যটি উচ্চারণ করেছিলেন, তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে তিনি বলেছিলেন অভিনন্দন, অভিনন্দন হে আবুতালিব নন্দন! আজ হতে আপনি আমার এবং সকল মু’মিন পুরুষ নারীর মাওলা হলেন[xxxvi] আহলে সুন্নাতের অধিকাংশ মুহাদ্দিস বা হাদীসবেত্তাগণ এই ঘটনাটি সকল সাহাবীর নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন যারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং উমরের কন্ঠে এই বাক্যটি শুনেছিলেন যেমন- যারা এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তাদের মধ্যে- ইবনে আব্বাস, আবু হোরায়রা, বুরাআ ইবনে আযিব, যায়েদ ইবনে আরকাম, সা’আদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস, আবু সাঈদ খুদরী এবং আনাস ইবনে মালিকের নাম উল্লেখযোগ্য

আল্লামা আমিনী তাঁর “আল-গাদীর” নামক গ্রন্থে ৬০ জন (ষাটজন) আহলে সুন্নাতের পণ্ডিতের নাম উল্লেখ করেছেন যারা স্বীয় গ্রন্থে উক্ত ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করেছেন[xxxvii] আবার অনেকেই এটাকে আবু বকরের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন

যখন অভিনন্দন অনুষ্ঠানের সমাপনী ঘটল তখন হাস্‌সান বিন সাবিত নামক একজন কবি, যিনি স্বীয় যুগে সুপ্রসিদ্ধ ছিলেন, তিনি বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল! আমি অনুমতি প্রার্থনা করছি যে, আপনার উপস্থিতিতে আলীর উদ্দেশ্যে কবিতার ক’টি লাইন পাঠ করবো

তিনি (রাসূল) বললেনঃ আল্লাহর নামে শুরু কর

অতঃপর হাস্‌সান উঁচুস্থানে উঠে পাঠ করতে লাগলেনঃ-

মুসলমানদের রাসূল (সা.) গাদীর দিবসে উচ্চস্বরে তাদেরকে ডাকলেন, কতটা বিস্ময়কর ব্যাপার যে, আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এভাবে আহ্বান করছেন

তিনি বললেনঃ তোমাদের অভিভাবক ও পৃষ্ঠপোষক এবং রাসূল কে?

সেখানকার সকলেই নির্দ্বিধায় বললেনঃ আপনার আল্লাহ আমাদের অভিভাবক এবং আপনি আমাদের রাসূল ও আমাদের মধ্যে এমন একজনকেও পাবেন না, যে বেলায়াতের (কর্তৃত্বের) নির্দেশের ক্ষেত্রে আপনার অবাধ্য হবে ও বিরোধিতা করবে

তখন আলীকে বললেনঃ হে আলী উঠে দাঁড়াও! কারণ, আমি তোমাকে আমার পরে ইমামত ও নেতৃত্বের জন্য নির্বাচন করেছি

অতএব আমি যাদের নেতা ও পৃষ্ঠপোষক, এই আলীও অনুরূপ তাদের পৃষ্ঠপোষকসুতরাং তোমরা তার সঠিক অনুসারী হও এবং তাকে ভালবাস

এবং সেখানে দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ! আলীর বন্ধুকে তোমার বন্ধু মনে কর এবং যে আলীর সাথে শত্রুতা করবে তুমিও তার সাথে শত্রুতা কর[xxxviii]

 


১।যেমনভাবে আভিধানিকদের ও ইতিহাসবিদদের ব্যবহৃত শব্দ সমুহে লক্ষ্য করা যায় যে, এই ছোট শহরটির অস্তিত্ব অতীতে ছিল না এবং এটা নতুন তৈরী হয়েছে। রাবেগ রাসূলের (সাঃ) যুগে মরুভূমির বেশী কিছু ছিল না। তুরাইহী তার মাজমাউল বাহরাইনে লিখেছেনঃ রাবেগ একটি মরুভূমি যা জোহফার নিকটবর্তী।মোজামূল বুলদানের ৩য় খণ্ডে, ১১ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে, “রাবেগ একটি মরুভূমি যেটা বুজওয়া ও জোহফার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত যা হাজীগণ অতিক্রম করে থাকে।

* মাওলা শব্দের অর্থ হচ্ছে- অভিভাবক, যার বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


রহনামায়ে হারামাইনে শারীফাইন, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৩।

মুনতাহাল আমাল, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১২০ ও তারিখে হাবিবুস সাঈর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪১১।

সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৯।

 প্রাগুক্ত, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩১২।

 ইমতাউল আসমা, পৃষ্ঠা-৫১০।

 প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৫১।

 সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৮।

 সীরাতে জিঈনী দেহলান, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৪৩ ও সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৮ ও ইমতাউল আসমা, পৃষ্ঠা-৫১২ এবং জাখীরাতুল খাওয়াস, পৃষ্ঠা-৩৭।

 সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৮।

 ১০ইমতাউল আসমা, পৃষ্ঠা-৫১০।

 ১১সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৯। 

 ১২প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৫১৭।

 ১৩ইমতাউল আসমা, পৃষ্ঠা-৫১৭।

 ১৪সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩১৭।

 ১৫প্রাগুক্ত।

 ১৬প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৩১৯।

 ১৭প্রাগুক্ত, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩২১।

 ১৮প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৩২৫।

 ১৯সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩০৮ ও ইমতাউল আসমা, পৃষ্ঠা-৫১০ এবং সীরাতে জিঈনী দেহলাম, ২য় খণ্ডপৃষ্ঠা-১৪৩।

 ২০হাবীবুস সাঈর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪১১।

 ২১সূরা-মায়িদা, আয়াত-৬৭।

 ২২ফারায়েদুস সিমতাঈন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৭০, অধ্যায়-১১, হাদীস-৩৭।

 ২৩মানাকিব ইবনে মাগাজেলী, পৃষ্ঠা-১৬।

 ২৪সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩৬ এবং তারিখে দামেশ্ক, ২য় খণ্ডপৃষ্ঠা-৪৫, হাদীস-৫৪৭।

 ২৫কানজুল উম্মাল, ১৩তম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১০৪-১০৫, হাদীস-৩৬৩৪০-৩৬৩৪৪ ও পৃষ্ঠা-১৩৩, হাদীস-৩৬৪২০।

 ২৬কানজুল উম্মাল, ১৩তম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৩৮, হাদীস-৩৬৪৩৭।

 ২৭ফারায়েদুস সিমতাঈন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৭৩, অধ্যায়-১২, হাদীস-৩৯।

 ২৮সীরাতে হালাবী, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩৬ ও মাজমাউল জাওয়ায়েদ, ৯ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১০৪-১০৮।

 ২৯সকল খুতবার উ হচ্ছে- আল-গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১০-১১, নাওয়ারুল উসূল, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৬৩, মোজামে কাবির তিবরানী, ৫ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৬৬, হাদীস- ৪৯৭১, নুজুলুল আবরার, পৃষ্ঠা-৫১।

 ৩০মানাকিব ইবনে মাগাজেলী, পৃষ্ঠা-১৯, হাদীস-২৪ এবং ফারায়েদুস সিমতাঈন,

 ৩১ফারায়েদুস সিমতাঈন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৭৩, অধ্যায়-১২, হাদীস-৩৯-৪০।

 ৩২তারিখে রওজাহুস সাফা, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৫৪১, আশারায়ে মোবাশ্শারা, পৃষ্ঠা-১৬৪, হামিদীয়া লাইব্রেরী (বাংলায় অনুদিত)।

 ৩৩তারিখে হাবিবুস সাঈর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪১১।

 ৩৪লামুল ওয়ারা বি ইলামিল হুদা, পৃষ্ঠা-১৩৩।

 ৩৫আল-গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৭০; মোহাম্মদ ইবনে জারীর তাবারী রচিত আল-বেলায়াহগ্রন্থ হতে সংগৃহিত ও মানাকেবে আলী ইবনে আবী তালিব রচনায় আহমাদ ইবনে হাম্বাল তাবারী যিনি খালিলী নামে প্রসিদ্ধ।

 ৩৬ফারায়েদুস সিমতাঈন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৬৫, অধ্যায়-৯, হাদীস-৩১-৩২, পৃষ্ঠা-৭১, অধ্যায়-১১, হাদীস-৩৮, আশারায়ে মোবাশ্শারা, পৃষ্ঠা-১৬৪, হামিদীয়া লাইব্রেরী (বাংলায় অনুদিত)।

 ৩৭আল-গাদীর, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৭২-২৮৩।

 ৩৮ফারায়েদুস সিমতাঈন, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৭৩, অধ্যায়-১২, হাদীস-৩৯-৪০ ও মাকতালে খাওয়ারেজমী, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৭ এবং তাযকিরাতুল খাওয়াস, পৃষ্ঠা-৩৯।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.