হিংসা

0 334

হিংসা

হিংসা অর্থাৎ: অন্যের সৌভাগ্যের বিনাশ কামনা করা।
… যেনে রাখ! হিংসা দশ ভাগে বিভক্ত তার থেকে নয়টি আলিমদের মধ্যে ও একটি জনসাধারণের ভিতরে পাওয়া যায়। তাই আমাদের উচিত যেন আমরা হিংসা থেকে দূরে থাকি। যেন এই হিংসা আমাদের উপরে কখনও পরাভূত না হতে পারে।
তোমরা কি জান! দুনিয়ার বুকে সর্ব প্রথম কোন গুনাহটি বাস্তবে আসে? যেনে রাখ সেটি হল হিংসা। যখন হাবীল আ. ও কাবীল আল্লাহর রাস্তায় কুরবানী করল এবং আল্লাহ তায়ালা হাবীলের কুরবানীকে কবুল করলেন। সেই সময় কাবীল হাবীলের সৌভাগ্যকে দেখে তাঁর ভিতরে হিংসা সৃষ্টি হল। অবশেষে হাবীলকে হত্যা করে নিজের মনের আগুনকে ঠাণ্ডা করল।
এক ছাত্র নিজের শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করল : মহাশয় আমি কয়েক বছর ধরে আপনার নিকট শিক্ষা অর্জন করছি কিন্তু কোন দিন আপনাকে মিসকি হাসতে পর্যন্ত দেখিনি এর কারণ কি?
শিক্ষক বললেন: আমার অন্তর গত পঁচিশ বছর ধরে একটি খারাপ গুনের সাথে জিহাদ করছে অবশেষে আজ তার উপরে পরাভূত ও বিজয়ী হলাম।সেটি হল প্রদর্শনিচ্ছা (রেয়া) লোকদেখানো কর্ম।

মহানবী(স.) বলেছেন: যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন নিষ্ঠা ও এখলাসের সাথে কাজ করবে তাঁর কথা হতে হিকমতপূর্ণ বাক্য জারি হবে।
শিক্ষক পঁচিশ বছর ধরে চেষ্টা করার পর সে প্রদর্শনিচ্ছার (রেয়া) উপরে পরাভূত হলেন। অর্থাৎ: তোমরা এই ভেবোনা যে আমরা ভাল ভাবে শিক্ষা অর্জন করার পর দেশে ফিরে নিজেকে ও সমাজকে ভাল শিক্ষা দেব। বরঞ্চ তোমাদের উচিত নিজের যৌবন কালে নিজেকে ভাল গুণের অলংকারেসজ্জিত কর তার পর সমাজকে শিক্ষা দাও। কেননা বয়স এমনি একটি জিনিস যা কখনও ফেরত আসে না। আর যৌবন কালে যে খারাব কাজে লিপ্ত থাকবে সেটি বৃদ্ধকালেও তোমার ভিতরে অবশিষ্ট থাকবে। যেমন কেউ যদি যৌবন কালে নামাহরামের (পরস্ত্রী – বেগানা মহিলাদের ) দিকে দেখে তার এই অভ্যাস বৃদ্ধকাল পর্যন্ত অবশিষ্ট বাকি থাকবে।
হযরত আলী(আ.)নাহ-জুল বলাগা (কলমাতে কেসারে) বলেছেন: হিংসা কম থাকলে শরীর সুস্থ থাকে”। সমস্ত রোগ জীবাণু হিংসার কারণে সৃষ্টি হয়। যদি তোমরা নিজেকে সুস্থ রাখতে চাও তাহলে কারো প্রতি হিংসা করনা। হিংসুটে মানুষরা সর্বদা রোগগ্রস্ত থাকে।
ইমাম সাদিক আ. বলেছেন: মুমিন ঈর্ষা করে, হিংসা করেনা কিন্তু মুনাফিক হিংসা করে, ঈর্ষা করেনা”। গিবতা অর্থাৎ: অন্যের সৌভাগ্যের বিনাশ কামনা ব্যতীতঅনুরূপ সৌভাগ্যের কামনা করা। কারো ভাল গুণ দেখে আল্লাহর কাছে কামনা করা যে আল্লাহ তুমি আমাকেও ওই ব্যক্তির মতো ভাল গুণে গুণাম্বিত কর।
ইমাম সাদিক আ. মুমিন ও মুনাফিকের পার্থক্যকে এই রূপ ভাবে প্রকাশ করলেন। যেমন কোন ভাল বক্তাকে দেখে আল্লার কাছে দুয়া করা যে আল্লাহ তুমি আমাকেও ওই রূপ ভাল বক্তা তৈরি করো।
হিংসা সর্বদা সমসন্মান সমবয়সি ব্যক্তিদের ভিতরে হয়।যেনে রাখ যে ব্যক্তি তোমার থেকে সিনিয়র তুমি তার প্রতি কখনও হিংসা করবেনা। কেননা তুমি জান যে সে তোমার থেকে বেশি গুণে গুণাম্বিত ও শিক্ষিত। কিন্তু সে যদি আবার সমবয়সী হয় তাহলে তোমার ভিতরে হিংসার আগুন জেগে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। আর সেই সময় তুমি হিংসা থেকে দুরে থাকার চেষ্টা কর।
আমাদের উচিত নিজের ভিতর থেকে হিংসাকে ধ্বংস করা। আর যখনি শয়তান আমাদের ভিতরে হিংসা জাগানোর চেষ্টা করবে তার সাথে লড়াই করে তাকে দুরে সরিয়ে দেওয়া।
আর জেনে রাখ! হিংসার করণে সর্বদা রোগ জীবাণু সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের হিংসা থেকে সর্বদাদূরত্ব লাভ করা দরকার যাতে ওই রোগ জীবাণু আমাদের উপরে আক্রমণ না করতে পারে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.